বর্ণিল ইলিশ ফোয়ারা
Tweet
বরগুনার রুপালি ইলিশকে দেশজুড়ে তুলে ধরতে বর্ণিল ইলিশ ফোয়ারা স্থাপন করা হয়েছে। বরগুনা সার্কিট হাউসের সামনের সুবিশাল চত্বরে স্থাপিত ফোয়ারাটির উদ্বোধন করা হয় ১৩ ডিসেম্বর। এরপর থেকে প্রতিদিন সন্ধ্যায় সৌন্দর্য পিপাসুরা ইলিশ ফোয়ারাটির মনোরম দৃশ্য উপভোগ করতে সেখানে ভিড় করছেন।
বরগুনার জেলা প্রশাসন বলছে, এটি দেশের প্রথম ‘থ্রিডি মিউজিক্যাল ফোয়ারা’। এর বিশেষত্ব হচ্ছে একই সঙ্গে ফোয়ারার পানি ওঠানামা (ড্যান্সিং) করবে, ইলিশ নড়াচড়া করবে (মুভিং) এবং মিউজিক বা সংগীত বাজবে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এই ফোয়ারা নির্মাণের উদ্যোগ নেন। তাঁর পরিকল্পনায় ফোয়ারাটির নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ। ২৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ফোয়ারাটি নির্মিত হয়। হরেক রঙের আলোকসজ্জায় রঙিন জলের ধারায় বর্ণিল ফোয়ারাটি সংগীতে এক ভিন্ন রকম আবেশ সৃষ্টি করে। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর এই ফোয়ারার সৌন্দর্য অবলোকন করার জন্য শহরের অনেক লোক সেখানে যান।
বরগুনা জেলায় রয়েছে ১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্র উপকূল। জেলার বুক চিরে বয়ে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে প্রমত্তা পায়রা, বলেশ্বর, বিষখালী নদ-নদী। জোয়ার ভাটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ জেলার মৎসজীবীরা প্রতিবছর আহরণ করেন প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন ইলিশ, যা দেশের মোট ইলিশ আহরণের এক–পঞ্চমাংশ। এর ফলে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইলিশ আহরণকারী জেলার পরিচিতি পেয়েছে বরগুনা।
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসান ঝন্টু বলেন, বরগুনা জেলার সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব সারা দেশে উপস্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। বরগুনা দেশের অন্যতম ইলিশ উৎপাদনকারী জেলা। সে হিসেবে দেশের প্রথম এই থ্রিডি মিউজিক্যাল ইলিশ ফোয়ারা নির্মাণের মধ্য দিয়ে জেলার ইলিশের ব্র্যান্ডিং হবে এবং এই সম্পদ সুরক্ষায় ভবিষ্যতে সবাই মনোযোগী হতে সাহায্য করবে।
বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য বিভাগ জানায়, দেশের মোট আহরিত ইলিশের ৬৬ ভাগের বেশি ইলিশের জোগান দেয় বরিশাল বিভাগ। আর এই ইলিশের সবচেয়ে বেশি জোগানদাতা জেলা ভোলা এবং দ্বিতীয় অবস্থানে বরগুনা।
বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, বরগুনার ইলিশসম্পদকে সারা দেশে উপস্থাপনের জন্য এই ফোয়ারা স্থাপন করা হয়েছে। মুজিব বর্ষে এটা বরগুনাবাসীর জন্য এক অনন্য উপহার।