কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনে বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের ৬৫০০ শ্রমিকের মৃত্যু
Tweet
আগামী বছর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে বসতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর। প্রায় ১০ বছর আগেই এই বিশ্বকাপের স্বত্ত্ব পেয়েছিল কাতার। এরপর থেকেই শুরু হয় প্রস্তুতি। সেই প্রস্তুতি নিতে গিয়ে ঘটেছে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়! ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ এর একটি প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এই বিশ্বকাপের জন্য স্টেডিয়ামসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করতে গিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিকের প্রাণ গেছে!
গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ২০১০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে কাতারে গড়ে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই মৃত্যুগুলো হয়েছে বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে। এই পরিসংখ্যানের পেছনে দেশগুলোর সরকারি হিসাবও তুলে ধরেছে গার্ডিয়ান। এর মাঝে বাংলাদেশি শ্রমিক মারা গেছে ১০১৮ জন। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ভারতের শ্রমিক- ২,৭১১ জন। এছাড়া নেপালের ১৬১৪ জন, পাকিস্তান ৮২৪ জন এবং শ্রীলঙ্কার ৫৫৭ জন শ্রমিক মারা গেছে।
অনেকদিন ধরেই কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনে মানবাধিকার লংঘনের বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা হচ্ছে। বিভিন্ন সংগঠন অভিযোগ করছে, শ্রমিকদের মানবাধিকার লংঘন করা হচ্ছে। গার্ডিয়ানের দেওয়া হিসেবে ২০২০ সালের শেষভাগের তথ্য যুক্ত হয়নি। তাহলে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারত। বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম বানানোর কাজ করা অবস্থায় ৩৭ জন শ্রমিক মৃত্যুবরণ করেছেন। যদিও বিশ্বকাপ আয়োজন কমিটি ৩৪টি মৃত্যু ‘কাজের বাইরের ঘটনা’ বলে দাবি করছে।
উল্লেখ্য, বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কাতারে তৈরি হচ্ছে দর্শনীয় সব স্টেডিয়াম। নতুন ৭টি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে রাস্তা তৈরি, নতুন একটি বিমানবন্দর, আধুনিক গণপরিবহন থেকে শুরু করে বড় বড় কিছু স্থাপনা নির্মাণের কাজও হয়েছে। বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের ২০ লাখ শ্রমিক এখন কাতারে অবস্থান করছেন। কাতারের দাবি, গত ১০ বছরে যত মৃত্যু হয়েছে, তার ৬৯ ভাগই নাকি স্বাভাবিক! ১২ ভাগের মৃত্যু সড়ক দুর্ঘটনায়। শুধু ৭ ভাগের মৃত্যুর সঙ্গে কাজের পরিবেশ জড়িত বলে দাবি কাতারের। ভারতীয়দের ক্ষেত্রে ৮০ ভাগই নাকি স্বাভাবিক মৃত্যু