সুন্দরবনে ওয়াচ টাওয়ার ও কাঁটাতারের বেড়া হয়নি সাত বছরেও
Tweet
৩ মে থেকে ৬ মে শরণখোলা রেঞ্জের দাসেরভারানী টহল ফাঁড়ির বনের অগ্নিকান্ড নিয়ে গত ১৯ বছরে সুন্দরবনে ২৫ বার আগুন লেগে ভস্মিভূত হয়েছে ৮০ একরের বেশি বনভূমি। শুষ্ক মওশুম শুরু হলেই বনসংলগ্ন মানুষের মাঝে বিরাজ করে আগুন আতংক।
২০১৬ সালে চাদঁপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকার বনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের পর তৎকালীন প্রধান বন সংরক্ষক মো. ইউনুস আলী আগুনে পুড়ে যাওয়া বনাঞ্চল পরিদর্শনে এসে ঘোষণা করেছিলেন, বনে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বনের সীমানায় কাঁটাতারের বেড়া এবং ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। কাঁটাতারের প্রস্তাবিত এলাকা হচ্ছে, নাংলী, কলমতেজী, গুলিশাখালী, আমুরবুনিয়া জিউধারা, বড়ইতলা, কাটাখালী এবং বৈদ্যমারী ।
সুন্দরবন সংলগ্ন শরণখোলা উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ভোলা নদী ভরাট হয়ে সরু খালে পরিণত হওয়ায় মানুষজন অনায়াসে সুন্দরবনে যাতায়াত করে মধুর চাক ভাঙ্গে এমনকি অনেকে ঘাষ খাওয়াতে গরু ছাগল বনের মধ্যে নিয়ে যায় এতে বিড়ি সিগারেটের আগুনেও বনে আগুন লাগে।
বর্তমান শুষ্ক মৌশুমে তারা আরো আগুন আতংকে রয়েছেন বলে গ্রামবাসীরা তারা জানান, আগুন লাগার অন্যতম কারণ হিসেবে একাধিক ব্যক্তি বলেন, শরণখোলা উপজেলার উত্তর রাজাপুর ও ধানসাগর এলাকার কয়েকটি অসাধু মৎস্য শিকারি চক্র প্রতিবছর শুষ্ক মৌশুমে নাংলী, পঁচাকোরালিয়া, তুলাতলা, নিশানখালী ও নাপিতখালী বনে আগুন লাগিয়ে বন পরিষ্কার করে মাছের বিল তৈরী করে। বর্ষা এলেই শুরু হয় ওই চক্রের মাছ ধরার উৎসব।
এ বিষয়ে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন বলেন, বনে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কাটাঁতারের বেড়া ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা আছে সেটি পাশ ও অর্থ বরাদ্দ করা হলেই কাজ শুরু করা হবে।
পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর ষ্টেশন এলাকায় ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিলের মধ্যে নাংলী, পঁচা কোরালিয়া,ও নাপিতখালী বনে ৩ বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ২০১৬ সালের ২৮ মার্চ নাংলী টহল ফাড়ি সংলগ্ন শিকদারের ছিলা, ১৩ এপ্রিল পচাকোরালিয়া বিল, ১৮ এপ্রিল আবদুল্লাহর ছিলা, ২৯ এপ্রিল তুলাতলা বিল এবং ২০১৭ সালের ২৬ মে নাংলী টহল ফাঁড়ির মাদ্রাসার ছিলা এলাকায় অগ্নিকান্ডে ব্যাপক বনভ‚মি পুড়ে ছাই হয়ে যায় । সর্বশেষ গত ৩ মে থেকে ৬ মে দাসেরভারানী টহল ফাঁড়ির বনে আগুনে প্রায় ১০ একর বনভূমির ছোট গাছপালা ও লতাপাতা গুল্ম পুড়ে যায়। এ নিয়ে গত ১৯ বছরে সুন্দরবনে ২৫ বার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে বন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়।