উপার্জনহীন পর্যটন কর্মীদের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করার দাবি
Tweet
শ্রমিকের কর্মক্ষেত্র, চাকরির নিরাপত্তা ও আয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যার্থ কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের জবাবদিহিতা নিশ্চিত কর
“কেমন আছে পর্যটন খাতের শ্রমিক- শ্রম আইনে ও করোনাকালে”- শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভায় দাবি
করোনাকালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র পর্যটন শ্রমিকদের সুরক্ষায় শ্রমআইন ও শ্রম আইন বাস্তবায়ন সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা, মালিকদের আচরণ, সরকারের দায়িত্বশীলতার বিষয়গুলি তুলে ধরতে “বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশন” এর উদ্যোগে ১০ জুলাই ২০২১, সন্ধ্যা ৭টা ৩০ মিনিটে “কেমন আছে পর্যটন খাতের শ্রমিকরা- শ্রম আইনে, করোনাকালে”-শীর্ষক অনলাইন আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের আহবায়ক রাশেদুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহসান হাবিব বুলবুল এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনলাইন আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বামগণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রজলুর রশিদ ফিরোজ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ও সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সহ-সভাপতি ওসমান আলী, উত্তারাঞ্চল হোটেল- রেস্তোঁরা শ্রমিক পরিষদের সদস্য সচিব আব্দুল মমিন মন্ডল, বাংলাদেশ ট্যুরিজম এন্ড হোটেলস ওয়ার্কার্স এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের যুগ্ম আহবায়ক খালেকুজ্জামান লিপন, ফারহানা ইয়াসমিন, সাহিদুল ইসলাম সাহিদ, মহিউদ্দিন রিমেল, খুলনা অঞ্চলের প্রতিনিধি জনার্দন দত্ত নান্টু, বরিশাল অঞ্চলের প্রতিনিধি ইমরান হাবিব রুমন, গাজিপুর অঞ্চলের প্রতিনিধি রাহাত আহমেদ, কক্সবাজার অঞ্চলের প্রতিনিধি রোকন উদ্দিন রাকিব, নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের প্রতিনিধি ইমরান হোসেন প্রমুখ।
আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, একদিকে দেশের অধিকাংশ শ্রমিক বিদ্যমান শ্রম আইনের আওতার বাইরে, অপরদিকে শ্রম আইনের অসংখ্য ধারায় শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষার পরিবর্তে শ্রমিকদের জিম্মি করার, বঞ্চিত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। আর শ্রম আইন বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী দপ্তরসমূহ শ্রমিকের নিরাপত্তার পরিবর্তে মালিকের স্বার্থ রক্ষাকারী সংস্থায় পরিণত হয়েছে। রুপগঞ্জের হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানির কারখানায় অগ্নিকান্ডে ৫২ জনের অধিক শ্রমিক কাঠামোগত হত্যার শিকার হওয়ার জন্য কারখানার ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সাথে সাথে পরিদর্শনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণও সমভাবে দায়ী। তাই শিল্প দুর্ঘটনাকে কমিয়ে আনতে হলে, মরাত্মক দুর্ঘটনাকে বন্ধ করতে হলে কাঠামোগত হত্যার জন্য দায়ী সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকের মৃত্যু বন্ধ করতে হলে ক্ষতিপুরণ আইন আই.এল.ও কনভেনশন ১২১ আলোকে সংশোধন করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের দাবির মুখে শ্রম দপ্তরগুলিকে শক্তিশালী করা হয়েছে। যদিও নিবন্ধিত প্রায় ৯০ হাজার কলকারখানা-দোকান-প্রতিষ্ঠান এবং অনিবন্ধিত প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ কলকারখানা-দোকান-প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের জন্য কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর পর্যাপ্ত শক্তিশালী নয়। তবে শ্রম দপ্তর আজ শ্রমিক আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ, শ্রমিকদের অধিকার সংকোচনের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহ্নত হচ্ছে।
নেতৃবৃন্দ, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে আলাদা করে স্বতন্ত্র পর্যটন মন্ত্রণালয় গঠন করা , পর্যটনের ১১৯টি ক্ষেত্রের কর্মীদের শ্রমআইনের আওতায় আনা, ন্যায্য মজুরি কাঠামো ঘোষণা, পর্যটন শ্রমিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিয়ে পর্যটন ক্ষেত্রগুলি চালু করা এবং করোনাকালে অবৈধ ছাঁটায়ের শিকার হয়ে প্রায় ১ বছর যাবত সম্পূর্ণ উপার্জনহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপনরত দক্ষ পর্যটন কর্মীদের পর্যটন পেশায় ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্য আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ, ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে হোটেল-রেস্তোঁরা, পর্যটন পরিবহন, ট্যুর গাইড, ট্যুর অপারেটরসহ পর্যটন খাতের সকল শ্রমিক কর্মচারীদের বকেয়া মজুরি এবং ঈদ বোনাস পরিশোধের জোর দাবি জানান।