কৈলাশ পর্বতের চূড়ায় আজ অবধি কেউ পৌঁছতে পারেনি, তবু কেন ছুটে যান পর্যটকেরা?
Tweet
পশ্চিম তিব্বতে অবস্থিত কৈলাশ পর্বত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৬ হাজার ৬৫৬ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। পর্বত হিসেবে এর উচ্চতা যে বিশাল বেশি তা নয়।
তবে বৌদ্ধ, হিন্দু এবং জৈন ধর্মের মানুষের কাছে এটি একটি বিখ্যাত পবিত্র স্থান। হিন্দুধর্মের মতে শিবের বাসস্থান এবং পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু এই কৈলাশ পর্বত।
কৈলাশ ও মানস সরোবর নিয়ে নানা অলৌকিক ঘটনাও শোনা যায়। যা এখনও পর্যন্ত অজানাই। এই পাহাড়কে রহস্যময় আখ্যাই দেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কেউই কৈলাশ পর্বত চূড়ায় আরোহণ করেনি।
হিন্দুমতে যা কিনা খোদ ঈশ্বরের বাসভূমি। গোটা হিমালয় পর্বতমালার মধ্যেই কৈলাসের আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। রহস্যে ঘেরা দুর্গম এই পর্বত সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত অনেক কিছুই জানা যায় না। তিব্বত মালভূমি থেকে ২২,০০০ ফুট ওপরে অবস্থিত কৈলাস হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও বৌদ্ধদের কাছেও অত্যন্ত পবিত্র ধর্মীয় স্থান।
ঠিক পিরামিডের আকারের এই পাহাড়ে অনেক প্রাচীন গুম্ফা ও গুহা রয়েছে। যেখানে দেখা মিলতে পারে বৌদ্ধ ও হিন্দু সন্ন্যাসীদের। এই সন্ন্যাসীরা লোকচক্ষুর আড়ালে বহু বছর ধরে তপস্যা করে চলেছেন। প্রতি বছর বহু মানুষ মানস সরোবর যাত্রা করেন। তবে দুর্গম প্রাকৃতিক পরিবেশের কারণে অল্প সংখ্যক কয়েকজনই যাত্রা সম্পূর্ণ করতে পারেন। তবে কৈলাস পর্বতের শৃঙ্গে এখনও পর্যন্ত কেউ উঠতে পারেননি। একটি নির্দিষ্ট পয়েন্টের পর যাওয়া সেখানে নিষিদ্ধ।
হিন্দুমতে কৈলাস পর্বতে যেহেতু ভগবানের বাস, তাই সেখানে যাওয়া নিষিদ্ধ। তিব্বতি লোককথা অনুযায়ী, মিলারেপা নামে এক বৌদ্ধ সন্ন্যাসী একবার কৈলাস পর্বতের শীর্ষের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। ফিরে এসে তিনি সবাইকে সাবধান করে দেন যে ঈশ্বরের বাসস্থানে না যাওয়াই ভালো। মানস সরবোর ছাড়াও কৈলাস পর্বতের নীচে রয়েছে আরও একটি অপরূপ সুন্দর হৃদ রাক্ষস তাল। ১৪,৯৫০ ফুট ওপরে অবস্থিত মানস সরোবর বিশ্বের উচ্চতম মিষ্টি জলের হৃদ। আরও একটি আশ্চর্যের বিষয় যত জোরেই হাওয়া থাকুক, মানস সরোবরের জল সবসময়ই শান্ত কিন্তু রাক্ষসতালের জল সব সময় অশান্ত থাকে।
কৈলাস পর্বতকেই পৃথিবীর কেন্দ্র বলা হয়ে থাকে। অনেকে বলে থাকেন কৈলাস পর্বত থেকে ফেরার পরে হঠাত্ করে চুল ও নখ বেশ কিছুটা বড় হয়ে যায়। আবার কথিত আছে, একবার কয়েকজন সাইবেরিয়ান পর্বতারোহী কৈলাস পর্বতের নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গেই তাদের বয়স কয়েক দশক বেড়ে যায় এবং এর এক বছর পরেই বয়সজনিত কারণে মৃত্যু হয় তাঁদের।