ওষুধ ছাড়াই নিয়ন্ত্রণে রাখুন থাইরয়েডের সমস্যা! জেনে নিন কয়েকটি অব্যর্থ ঘরোয়া উপায়
Tweet
থাইরয়েড! এই সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। থাইরয়েড আমাদের শরীরে গলায় অবস্থান করে। এটি দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো। এর মধ্য়ে বেশ কয়েকটি হরমোন তৈরি হয়ে। আর যখন থাইরয়েডে হরমোনগুলি অস্বাভাবিক উত্পাদন হয়ে তখনই সমস্যার সৃষ্টি হয়ে।
সাধারণত দু ধরনের থাইরয়েড সমস্যা দেখা যায়। হাইপারথাইরয়েডিজম ও হাইপোথাইরয়েডিজম। থাইরয়েড গ্রন্থিতে অতিরিক্ত হরমোন তৈরি হলে তাকে হাইপারথাইরয়েডিজম বলে। আর পর্যাপ্ত হরমোন তৈরি হলে তাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলে। থাইরয়েড সমস্যা প্রধানত দেখা যায় স্ট্রেস, ডায়েটের সমস্যা। ঘরোয়া উপায় অনুসরণ করলেই রেহাই পাবেন এই সমস্যা থেকে।
১) যদি ডায়েট করে থাকেন তাহলে অ্য়ান্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত ফল ও শাক-সবজি খান। কারণ, এইগুলি থাইরয়েডের সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। এছাড়াও ভিটামিন-বি ১২ যুক্ত খাবার থাইরয়েড গ্রন্থিকে সঠিক ভাবে কাজ করতে সহায়তা করে।
২) আপনার থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে কোনও ভাবেই চিনি খাবেন না। অতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে T3 ও T4— এই দুটি হরমোন উত্পন্ন হয়ে। যা স্বাস্থ্য়ের পক্ষে খারাপ।
৩) যখন আমাদের দেহে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়োডিন থাকে না তখন থাইরয়েড হরমোন তৈরি করতে পারে না। যা হাইপোথাইরয়েডিজম-এর দিকে পরিচালিত হয়ে। তাই আয়োডিন যুক্ত খাবার খান।
হাইপারথাইরয়েডিজম এর লক্ষণ
হাইপারথাইরয়েডিজমের কারণে থাইরোটক্সিসিস হয়। এমতাবস্থায় আক্রান্ত ব্যাক্তির দেহে কয়েকটি লক্ষণ প্রকাশ পায়। এই লক্ষণগুলোর মাধ্যমে হাইপারথাইরয়েডিজম সনাক্ত করা হয়। তবে সবার ক্ষেত্রে একই রকম লক্ষণ প্রকাশ নাও পেতে পারে। তাই হাইপারথাইরয়েডিজম নির্নয় করার জন্য ল্যাবটেস্টের প্রয়োজন হতে পারে। হাইপারথাইরয়েডিজম এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
ঘাম বেড়ে যাওয়া
সর্বদা উদ্বিগ্ন থাকা
ওজন কমে যাওয়া
অল্পতেই ঘাবড়ে যাওয়া
মেজাজ খিটখিটে হওয়া
হার্টবিট বা হৃদস্পন্দন দ্রুত হওয়া (বুক ধড়ফড় করা)
মহিলাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক
অন্ত্রের গতি বেড়ে যায় যার ফলে ডায়রিয়া হয়।
হাত পায়ে কম্পন অর্থাৎ অনইচ্ছাকৃতভাবে হাত পায়ে কাঁপন।
হাইপার থাইরয়েডিজম থেকে মুক্তির উপায়:
আমাদের দেশে হাইপারথাইরয়েডিজম এর চিকিৎসা সাধারণত তিনধরনের হয়ে থাকে। প্রথমে ওষুধ দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করা হয়। নিয়মিতভাবে ১৮ মাস ওষুধ সেবনে অনেক হাইপারথাইরয়েডিজম রোগী ভালো হয়ে যায়। তবে কখনো কখনো ১৮ মাস ওষুধ সেবন করার পর আবার ১৮ মাস ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে।
পরবর্তী পর্যায় হলো থেরাপি এবং সবশেষ চিকিৎসা পদ্ধতি হলো সার্জারী বা অপারেশন।
হাইপারথাইরয়েডিজম রোগীর খাবার।
যেসব খাবার খেলে থাইরয়েড গ্রন্থি ভালো থাকে সেগুলো খেতে হবে এবং যে সব খাবার থাইরয়েড জটিলতা বৃদ্ধি করে সেগুলো বাদ দিতে হবে।
১. মাছ,মাংস, টার্কি,মুরগীর ডিম ও মিষ্টিকুমড়ার বীচিতে প্রচুর পরিমানে টাইরোসিন রয়েছে। থাইরয়েড গ্রন্থিকে ভালো রাখতে এই খাবারগুলো খেতে হবে।
২. থাইরয়েড জনিত সমস্যায় গয়ট্রোজেনাস জাতীয় খাবারগুলো খাওয়া যাবে না। এই জাতীয় খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে ফুলকপি, বাধাঁকপি,চিনাবাদাম, সায়াসস ইত্যাদি। তবে সবধরনের সবজি ভালোভাবে রান্নাকরে খেতে হবে।
৩.রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে গ্লুটেন প্রোটিনযুক্ত খাবারগুলো খেতে হবে। আর এজন্যই গম,শস্যদানা,যব, বার্লি খেতে হবে।
৪.থাইরয়েড হরমোন আমাদের বিপাকে সাহায্য করে। তাই থাইরয়েড গ্রন্থি ও লিভারকে সুস্থ রাখতে বেশি করে ফ্যাটিঅ্যাসিড যুক্ত খাবারগুলো খেতে হবে। তৈলাক্ত মাছ,কাঁচা বাদাম ও অলিভওয়েল ফ্যাটিঅ্যাসিড যুক্ত খাবারগুলোর অন্তর্ভুক্ত।
৫.আয়োডিনযুক্ত খাবার ও আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে।