ঈদের ছুটিতে ঘুরে আসতে পারেন সোনারগাঁ

Share on Facebook

প্রতিদিনের অফিস-কাজ কার-ই বা ভালো লাগে? ব্যস্ত নগরজীবনে কাজকর্মের চাপে যখন পিষ্ট হয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তখনই ঢাকার আশপাশের কোনো দর্শনীয় স্থান ঘুরে আসতে পারেন। একঘেয়েমি দূর হওয়ার পাশাপাশি ইতিহাস-ঐতিহ্যের সান্নিধ্য পাবেন খুব কাছ থেকে। তাই এবার ঈদে ঢাকার কাছাকাছি পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁ থেকে।

ঢাকা থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এককালের রাজধানী মুহূর্তেই আপনার ব্যস্ততাকে শান্ত করে তুলবে। প্রাচীন এ রাজধানী ‘বড় সর্দারবাড়ি’ নামে পরিচিত। জমিদার বাড়িতে স্থাপিত জাদুঘরটি আজ বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন বা সোনারগাঁ জাদুঘর নামে পরিচিত।

Image result for সোনারগাঁ জাদুঘর

যা দেখবেন

লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন তথা সোনারগাঁ জাদুঘরে প্রবেশ করতেই প্রশস্থ বিশাল সড়কের দুপাশের ফুলের বাগান স্বাগত জানাবে আপনাকে। গেট পেরোতেই দেখা মিলবে প্রাচীন ‘বড় সর্দাবাড়ি’ জমিদার প্রাসাদ। প্রাসাদের সামনেই রয়েছে স্বচ্ছ পুকুরে বাঁধানো ঘাটলা। দুই পাশে দুটি অশ্বারোহী সৈনিকের মুর্তি ফুটিয়ে তুলবে জমিদারের শৌর্য আধিপত্য। তবে প্রাচীন এ স্থাপনা দুর্বল হয়ে পড়ায় ২০১২ সালের ১৪ ডিসেম্বর ‘বড় সর্দারবাড়ির’  সংস্কারকাজ শুরু হয়। সম্প্রতি সংস্কারকাজ শেষে খুলে দেওয়া হয়েছে এই প্রাসাদটি। ২৭ হাজার ৪০০ বর্গফুটের এই প্রাসাদটির নিচতলায় ৪৭টি ও দোতলায় ৩৮টি কক্ষ রয়েছে। দ্বিতীয়তলার বাড়িটি দুটি ভাগে তৈরি হয়েছে। মধ্যভাগে লাল রঙের প্রাসাদটি মোগল আমলের স্থাপত্যশৈলী অত্যন্ত নিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

Image result for সোনারগাঁ জাদুঘর

এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য, শেখ রাসেলের ভাস্কর্য এবং শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের একটি ভাস্কর্য রয়েছে। জাদুঘরে দর্শনার্থীরা প্রাচীন সুলতানদের ব্যবহার করা অস্ত্র, বর্ম, তৈজসপত্র, অলংকার, মুদ্রাসহ বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শন দেখতে পারবেন। এ ছাড়া বাংলার বাঁশ, বেত, জামদানি, কাঠসহ বিভিন্ন লোকজ শিল্প পণ্যের প্রদর্শনী দেখতে পাবেন। প্রতিবছর বৈশাখে জাঁকজমকভাবে আয়োজিত হয় লোকশিল্প মেলা।

Image result for পানাম নগরী

পৃথিবীজুড়ে হারিয়ে যাওয়া শহরের অন্যতম একটি শহর পানাম নগর। আপনি দেশে থেকে এই শহরের আভিজাত্য ও গুরুত্ব উপলব্ধি করতে না পারলেও গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ জন বিদেশি পর্যটক এই শহর দেখতে আসেন। প্রাচীন এই নগরীর অধিকাংশই বিলুপ্ত হয়ে গেলেও ভবনগুলো মাথা উঁচু করে তার আভিজাত্য প্রকাশ করে যাচ্ছে আজও। পুরো নগরীতে মোট ৫২টি ভবন রয়েছে।

পুরো নগরীর সব স্থাপনা মোঘল ও ইউরোপীয় ধাঁচের। এ ছাড়া ঘাটলা বাঁধানো পুকুর, মন্দির ও নীলকুঠি দেখতে পাবেন এখানে।

 

যেভাবে যাবেন

সোনারগাঁ জাদুঘর এবং পানাম নগর রাজধানী ঢাকা থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার পূর্ব দিকে অবস্থিত। বাসে করে আসতে চাইলে ঢাকার গুলিস্তান থেকে বোরাক কিংবা দোয়েল পরিবহনে উঠতে হবে আপনাকে। এ ছাড়া যাত্রাবাড়ী থেকে কুমিল্লাগামী যেকোনো লোকাল বাসেও উঠে চলে আসবেন সোনারগাঁ জাদুঘর গলি কিংবা মোগরাপাড়া চৌরাস্তা। খরচ পড়বে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। সেখান থেকে রিকশা বা অটো রিকশায় ১০ থেকে ৩০ টাকায় পৌঁছে যাবেন জাদুঘরে। এ ছাড়া জাদুঘর থেকে পানাম নগর যেতে রিকশা ভাড়া নেবে ১৫ টাকা।

জাদুঘরে সর্বসাধারণের প্রবেশ মূল্য ৩০ ও বিদেশিদের জন্য ১০০ টাকা। পানামনগরে প্রবেশ মূল্য ১৫ এবং বিদেশিদের জন্য ১০০ টাকা।

সপ্তাহের বুধ ও বৃহস্পতিবার জাদুঘর বন্ধ। তবে পানামনগর সপ্তাহের সাতদিনেই খোলা পাবেন।

 

কোথায় খাবেন

সোনারগাঁ এসে জাদুঘরের সামনেই তিনটি খাবার রেস্তোরাঁ রয়েছে। যা যথাক্রমে তাজমহল হোটেল, মাস্টার ফাস্টফুড এবং টুরিস্ট বিরিয়ানি হাউজ। দর্শনার্থীরা প্যাকেটজাত খাদ্য এবং বোতলজাত পানীয় গ্রহণ করাই উত্তম।

 

Leave a Reply