পর্যটন খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা জরুরী
Tweet
পর্যটন খাতের উন্নয়নে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, পর্যটক সেবাদাতা সংস্থাসমূহের মধ্যে সমন্বয় এবং অসম প্রতিযোগিতা দূর করা জরুরী বলে মত প্রকাশ করেছেন অভিজ্ঞ ট্যুর আপারেটরগণ।
বাংলাদেশে পর্যটন শিল্প এখনও শৈশব পর্যায়ে রয়েছে। সরকারি ও পর্যটন সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুসারে বাংলাদেশের পর্যটন খাতে প্রত্যক্ষভাবে ১৫ লাখ এবং পরোক্ষভাবে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ কর্মরত রয়েছে। বাংলাদেশের জিডিপি’তে পর্যটন শিল্পের অবদান ৪শতাংশের বেশী।
কোভিড-১৯ মহামারীর থাবায় পর্যটন শিল্প সবচে ক্ষতিগ্রস্থ খাতগুলির অন্যতম। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে পর্যটনে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত প্রায় ৪০ হাজার মতান্তরে ৬০হাজার কর্মী চাকরী হারায়, পরোক্ষভাবে জড়িতদের অধিকাংশই বেকার হয়ে পড়ে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট বহু প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়, কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়, ঋণগ্রস্থ হয়ে হারিয়ে যায়।
বর্তমানে কোভিড-১৯ মহামারীর ধকল কাটিয়ে পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। আপাত দৃষ্টিতে পর্যটন খাতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে মনে হলেও পর্যটন খাত কতটা গতিশীল হয়েছে, পর্যটন খাতে বিরাজমান অবস্থা পর্যটন শিল্পের টেকসইতা নিশ্চিতে ক্রীয়াশীল, কোভিড-১৯ মহামারীর পর পৃথিবীর প্রতি আমাদের ভালবাসা ও দায়িত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটন খাত পরিবেশ ও প্রকৃতিবান্ধব কি না, সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের এসডিজি (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা) অর্জনে কাজ করছে, পর্যটন খাত এসডিজি অর্জনে কতটা সহায়ক- এসব প্রেক্ষিত সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপের আয়োজন করছে পর্যটন বিষয়ক পত্রিকা ‘পর্যটনিয়া’। ধারাবাহিক আয়োজনের প্রথম পর্বে “কোভিড-১৯ পরবর্তী পর্যটন শিল্প/ট্যুর অপারেটর : বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও আগামীর সম্ভাবনা” শীর্ষক সংলাপ শনিবার ২৬শে নভেম্বর ঢাকার প্রবর্তনায় অনুষ্ঠিত হয়। এই অনুষ্ঠানে ট্যুর আপারেটর সংস্থা সমূহের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
রয়াল বেঙ্গল ইকো ট্যুর-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহম্মদ নাজমুল হাসান সোহেল বলেন, বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পের শৈশবকাল চলছে। বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রীর তথ্য অনুসারে দেশের জিডিপিতে পর্যটনের অবদান ৪শতাংশ, দ্রুত ৬শতাংশে পৌছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি শিল্পের শৈশবকালে জাতীয় অর্থনীতিতে এমন অবদান থাকলে, ভবিষ্যত সম্পর্কে আশাবাদী হতেই হয়। কিন্তু বিশৃঙ্খল আর অপরিকল্পিতভাবে কোনো শিল্পের পরিসর বড় হতে থাকলে উন্নয়ন বাধাগ্রস্থ হয়।
পর্যটন খাতের উন্নয়নে কোনো পক্ষের আন্তরিকতার অভাব নেই উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ পরবর্তী পর্যায়ে দেশের পর্যটন খাতে নিরব বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা চলছে। এই বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনার ফলে কেউ কেউ সাময়িক লাভবান হলেও দীর্ঘ মেয়াদে পর্যটন শিল্প ও পর্যটন গন্তব্যকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। গত ডিসেম্বরে ২০লাখ পর্যটকের একসাথে কক্সবাজারে উপস্থিত হওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, দায়িত্বশীল ট্যুর অপারেটরা কক্সবাজারের পরিস্থিতি দেখে আতঙ্কিত হয়েছি- কারণ, একসাথে বিশ লাখ পর্যটকের ধারণক্ষমতা কক্সবাজার এখনও অর্জন করে নাই। এই অরাজক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে কিছু হোটেল, রেস্টুরেন্ট আর মৌসুমী ট্যুর অপারেটর ও ব্যবসায়ীরা সাময়িক লাভবান হলেও দীর্ঘ মেয়াদে পর্যটন গন্তব্য হিসেবে কক্সবাজার, পর্যটক ও পর্যটন শিল্প ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। টেকসই পর্যটন শিল্পের স্বার্থেই পরিকল্পিতভাবে পর্যটন কার্যক্রমে পরীক্ষিত ও অভিজ্ঞ ট্যুর অপারেটরদের সম্পৃক্ত করতে হবে।
সাইনআপ বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অসীম কুমার ঘোষ বলেন, কোভিড-১৯ কালীন সময়ে ট্যুর অপারেটররা ভয়াবহ দুঃসময় পার করেছেন। তিনি নিজেও অফিস ছোট করে আনতে বাধ্য হয়েছেন। ট্যুর আপারেটর পেশার বিকল্প খুঁজলেও ভালোবাসার টানে ভর্তুকি দিয়ে প্রতিষ্ঠান জীবিত রেখেছেন। কোভিড-১৯এর প্রভাবে শুরু হওয়া ট্যুর অপারেটর দুর্দিন এখনও শেষ হয় নাই।
ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন টোয়াবের আরও জোরদার ভূমিকা গ্রহনের আগ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি সহায়তা ছাড়া ট্যুর অপারেটররা বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা কষ্টসাধ্য হবে। পর্যটন শিল্পের প্রতিটি খাত একে অন্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত, ফলে সুদিন আনতে সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।
ট্রিপ মেকারের ম্যানেজিং পার্টনার হাসানুজ্জামান রনি আভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যটন গন্তব্যে দীর্ঘ দিন ট্যুর অপারেট করার অভিজ্ঞতা পর্যলোচনা করে বলেন, বাংলাদেশের পর্যটন প্রায় ৮০ভাগ প্রাক কোভিড পর্যায়ে পৌছে গেছে। তবে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বৈশ্বিক মন্দার ফলে সৃষ্ট ডলার সঙ্কট পর্যটন প্রবণতায় নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করেছে। এছাড়াও অধিক মুনাফার লোভে কিছু সিন্ডিকেট ও রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব পর্যটন শিল্পের অগ্রযাত্রায় প্রতিবন্ধকতা তৈরী করছে।
পদ্মা সেতুর কারণে কুয়াকাটা জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। কিন্ত কুয়াকাটায় পর্যটকদের ধারণ করার মত উল্লেখযোগ্য অবকাঠামো এখনও গড়ে উঠে নাই। ফলে কুয়াকাটামুখী পর্যটকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হলেও অন্যান্য অসুবিধার কারণে হতাশ ও বিরক্ত হন। সুতরাং, পর্যটন গন্তব্য নির্ধারণ ও প্রমোশনের ক্ষেত্রে ট্যুর অপারেটরদের সচেতনতা আবশ্যক।
ট্যুর অপারেটরদের সমস্যা সমাধানে টোয়াবকে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্যুর অপারেটরসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেবাদাতা শ্রেণির পারস্পরিক সম্পর্ক অস্থিতিশীল। পরস্পরের মধ্যে বিশ্বাস ও আস্থার ঘাটতি রয়েছে। নিজেদের স্বার্থেই পারস্পরিক সম্পর্কে বিদ্যমান অস্থিতিশীলতা দূর করতে হবে।
ম্যানগ্রোভ ট্যুরিজমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তাকদির আবিদ পনির মতে, পর্যটন শিল্পের অগ্রযাত্রায় এবং পর্যটকদের স্বার্থেই দায়িত্বশীল ট্যুর অপারেটরের বিকল্প নেই। দুঃখজনক হলেও সত্য যে পর্যটন খাতে এমন অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে যাতে ট্যুর অপারেটররা নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। পর্যটক এবং ট্যুর আপারেটরদের মাঝে দেয়াল দাঁড় করিয়ে দিয়ে প্রমাণের চেষ্টা চলছে যে ট্যুর আপারেট ছাড়াও আনন্দময় ভ্রমণ সম্ভব। অথচ ট্যুর আপারেটরাই পর্যটকের পক্ষ হয়ে, পর্যটকের স্বার্থে অন্যান্যদের সাথে দড় কষাকষি করেন।
দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতার আলোকে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, মৌসুমী ও অদক্ষ ট্যুর অপারেটরদের কথা ভিন্ন, কিন্তু প্রফেশনাল ও অভিজ্ঞ ট্যুর আপারেটররা পর্যটকের আনন্দময় এবং নিরাপদ ভ্রমণে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করেন যা একজন পর্যটকের পক্ষে সম্ভব নয়। কারণ, পেশাগতভাবে পর্যটনের সাথে তার সম্পর্ক প্রতিদিনের নয়। একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ট্যুর অপারেটর পর্যটন গন্তব্যের চালচিত্র যতটা বুঝেন, যতটা জ্ঞান রাখেন সঙ্গত কারণেই পর্যটকের পক্ষে তা সম্ভব হয় না। হোটেল-রিসোর্ট, সড়ক-নৌ ও বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো বর্তমানে সরাসরি পর্যটকদের বিভিন্ন ছাড় দিয়ে প্রলোভিত করছে, প্যাকেজ বিক্রি করছে, কর্পোরেট সংস্থাগুলোর কারণে অনেকেই ট্যুর অপারেটরদের পর্যটকদের সেবা বিনা নোটিশে বাতিল করছে- শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সবাই। এই অরাজকতা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে যথাযথ নীতিগত পরিবর্তন প্রয়োজন।
ট্যুর ডি কালচারের সত্ত্বাধিকারী এবিএম জাকারিয়া রাজিব বলেন, পর্যটন শিল্পের ভবিষ্যত ও কার্যক্রমের ব্যপ্তির বিষয়টি বিবেচনা করে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে পৃথক করে পর্যটন মন্ত্রণালয় গঠন করা প্রয়োজন। পর্যটনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সমন্বয় ও পারস্পরিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার বিকল্প নেই। ভ্রমণকে উপভোগ করতে হলে ট্যুর অপারেটরের উপর নির্ভর করাই উত্তম। কারণ পর্যটন গন্তব্যের দর্শনীয় নির্দর্শনের পাশাপাশি স্থানীয় কালচার, আইন-কানুন, নিয়ম-রীতি, নিরাপত্তা-ঝুঁকিসহ সামগ্রিক বিষয়ে একজন ট্যুর অপারেটর এবং গাইড ভালো জানেন। ট্যুর অপারেটর পর্যটককে যতটা সহযোগিতা করেন তার তুলনায় সার্ভিস চার্জ অত্যন্ত নগণ্য। এই বিষয়গুলো ব্যাপকভাবে প্রচার হওয়া দরকার।
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, বিমান সংস্থা থেকে হোটেল, ব্যাংক থেকে মোবাইল অপারেটর- সব কর্পোরেট সংস্থাগুলো সরাসরি ট্যুর প্যাকেজ বিক্রি করছে। ট্যুর অপারেটদের জন্য প্রযোজ্য ছাডগুলো ট্যুর অপারেটরদের পরিবর্তে মধ্যসত্বভোগী এজেন্ট বা অতিথিদের দিচ্ছে- এতে লাভ হচ্ছে কার! প্যাকেজের ফাঁদে পড়ে এবং ট্যুর অপারেটরদের এড়িয়ে যাওয়ার ফলে গত ডিসেম্বরে কক্সবাজারে অনেককেই ২০টাকা দামের আলুভর্তা ১শ টাকায় আর ৩০টাকা প্লেটের ভাত ২শ টাকায় খেতে হয়েছে। ট্যুর অপারেটররা সম্পৃক্ত থাকলে এমনট কখনোই ঘটতো না।
এবিএম জাকারিয়া আরও যোগ করেন বলেন, অকপটে স্বীকার করতে হবে যে শখে করে অনেকেই ট্যুর অপারেটর পেশায় আসেন।বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকায় নিজেরা ক্ষতিগ্রস্থ হন, পর্যটকদের ক্ষতিগ্রস্থ করেন এবং ট্যুর অপারেটরদের সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরী করে পেশাদার দক্ষ ও অভিজ্ঞ ট্যুর অপারেটরদের বিপদে ফেলেন। এমন ধরণের অপারেটরদের সম্পর্কেও পর্যটকদের সতর্ক করতে হবে, এতে প্রকৃত ট্যুর অপারেটদের প্রতি আস্থা তৈরী হবে।
ইউনিটি ট্যুরিজম এন্ড ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ আসাদুজ্জামান সকলের সাথে সহমত পোষণ করে বলেন, পর্যটন সংশ্লিষ্টদের পারস্পরিক আস্থাহীনতা ও সম্পর্কের দূরত্বের কারণ অনুসন্ধান করে তা বিলোপ করতে হবে। এছাড়া আত্মসমালোচনাও জরুরী। পরস্পরের সাথে অসম প্রতিযোগিতা, ব্যবসা বা সামান্য লাভের জন্য নৈতিকতার সাথে আপোষ করার প্রবণতা দূর হওয়া প্রয়োজন।
জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে পর্যটন খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে উল্লেখ করে মোহম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, পর্যটন ক্ষেত্রে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ সমূহ দূর করা না হলে এসডিজি অর্জনের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিও দূরহ হয়ে পড়বে।
ডিসকভার হলিডেজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, ট্যুর অপারেটরদের সর্বাগ্রে প্রয়োজন নিজ কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা ও একনিষ্ঠতা। অনেক ট্যুর অপারেটর বিভিন্ন হোটেল বা পরিবহন সংস্থার সাথে এমন শর্তে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয় যা পালন করা সম্ভব হয় না। ফলে এসব প্রতিষ্ঠান পরবর্তীতে ট্যুর অপারেটরদের সাথে একত্রে কাজ করতে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়ে।
প্রচলিত পর্যটন গন্তব্যের বাইরে নতুন নতুন পর্যটন গন্তব্যের প্রতি পর্যটকদের আকৃষ্ট করার আহ্বান জানিয়ে মোহম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, পর্যটক যথাযথ সেবা পেলে ট্যুর অপারেটরের প্রতি আস্থা রাখেন। কিন্তু শখের ও অদক্ষ ট্যুর অপারেটরের সংখ্যা বেশী না হলেও ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে আশ্রয় করে এদের আধিপত্য বেশী। এই গোষ্ঠীর ট্যুর অপারেটরদের কথায় এবং কাজে মিল থাকে খুব কম। এর দায় বহন করতে হয় সকল ট্যুর অপারেটরদের।
ট্যুর প্ল্যানার, অপারেটর ও ক্রুজ লাইন সংস্থা আরাল সি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহম্মদ নাসিরুদ্দীন বাদল বলেন, একজন ট্যুর অপারেটর হিসেবে শুধু নয়, ক্রুজ শিপিং লাইনের একজন হিসেবেও আমি ট্যুর অপারেটরদের সাথে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি এবং ট্যুর অপারেটরদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব প্রদান করি।
পর্যটন ব্যবসার ক্ষেত্রে নৈতিক অবস্থান অত্যন্ত জরুরী উল্লেখ করে তিনি বলেন, অধিক লাভের প্রলোভন থাকলেও আরাল সি লিমিটেড কখনোই ট্যুর অপারেটরদের পূর্ব নির্ধারিত প্যাকেজ/বুকিং বাতিল বা স্থগিত করে নাই। তবে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতাও রয়েছে, যেমন অনেক সময় বুকিং দিয়েও কোনো কোনো ট্যুর অপারেটর শেষ মূহুর্তে বুকিং/রির্জাভেশন বাতিল করেন, এতে ট্যুর অপারেটরকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে না হলেও সেবাদাতাকে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়। তবে, এদের সংখ্যা খুবই কম।
মোহম্মদ নাসিরুদ্দীন বাদলের মতে, সকল পক্ষের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা ও মত বিনিময় যেমন প্রয়োজন, তেমন গবেষণাও জরুরী। প্রকৃত চ্যালেঞ্জসমূহ সুচিহ্নিত করে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির মধ্যে এমন সংলাপ অনুষ্ঠান আরও বেশী বেশী আয়োজিত হওয়া উচিত।
সকলের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়ে পযটনিয়া সম্পাদক আবু রায়হান সুমন বলেন, সংলাপের এই ধারা, অব্যাহত থাকবে। পর্যটন সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলিকে নিয়ে ধারাবাহিক সংলাপ চলবে এবং বক্তব্যসমূহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কাছে পৌছানোর ক্ষেত্রে পর্যটনিয়া দায়িত্ব পালন করবে।