গরমে আরামদায়ক ভ্রমণের জরুরী টিপস

Share on Facebook

একজন ভ্রমণকারীর ভ্রমণের সময় অনেক গুলো খুঁটিনাটি বিষয় এর প্রতি খেয়াল রাখতে হয়। যেমন- যেখানে ভ্রমণে যাচ্ছি সেখানকার আবহাওয়ার বর্তমান তাপমাত্রা থেকে শুরু করে পরিবেশ – পরিস্থিতি, ভাষা, খাবার – দাবার, সংস্কৃতি, যাতায়াত ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হয়।

ভ্রমণের এই খুঁটিনাটি বিষয় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে “গরমের সময় কীভাবে আপনি আরামদায়ক ভ্রমণ করবেন”। তো চলুন জেনে নেয়া যাক গরমে আরামদায়ক ভ্রমণের গুরুত্বপূর্ণ টিপসগুলো।

 

তাপমাত্রা জেনে নেয়া

আপনি যে স্থানে ভ্রমণে যেতে চান সে স্থান বা দেশের তাপমাত্রা সম্পর্কে জেনে নিন। ভ্রমণে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে এই বিষয়টাকে গুরুত্ব দেন না। কিন্তু কোথাও ভ্রমণে গেলে প্রথম যে বিষয়টি খেয়াল রাখা প্রয়োজন তা হল: ঐ স্থানের তাপমত্রা সম্পর্কে অবগত হওয়া।

 

তাপমাত্রা কীভাবে জানব?

তাপমাত্রা জানা খুবই সহজ। আপনি আপনার মোবাইল থেকে গুগল, ইয়াহু বা বিং সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে আপনি যে স্থানে ভ্রমণে যেতে চান তার নাম লিখে সাথে তাপমত্রা লিখে সার্চ করুণ। তাহলেই সে স্থানের বর্তমান তাপমত্রা দেখতে পাবেন।

যেমন- আপনি লিখেতে পারেন: “ঢাকার তাপমাত্রা” বা, “Dhaka Temperature”

এছাড়া আপনি সরাসরি এই ওয়েবসাইটে গিয়েও তাপমাত্রা সম্পর্কে জানতে পারেন: “accuweather.com”

 

পাতলা জামাকাপড় পরুন

ভ্রমণে পাতলা ঢিলেঢালা জামাকাপড় পড়াই শ্রেয়। তবে অনেকে জিন্স টাইপের জামাকাপড় পরিধান করে থাকেন। আবার, দেশ এবং কালচার অনুযায়ী জামাকাপড় এক এক ধরনের হয়ে থাকে।

আমেরিকাতে যে ধরনের জামাকাপড় পরিধান করা হয়, বাংলাদেশে তা ভিন্ন। দেশ অনুযায়ী জামাকাপড় এর পার্থক্য থাকতে পারে কিন্তু, একজন ভ্রমণকারীকে এটা অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যে শীতে আপনি যা পরে ভ্রমণ করেছেন, গ্রীষ্ম কালে সেটা পরা যাবে না।

গ্রীষ্মে যতটা সম্ভব হালকা পাতলা গড়নের জামাকাপড় পরিধান করে ভ্রমণে বের হন। এতে শরীরে খুব সহজেই বাতাস প্রবেশ করতে পারবে। আর আপনি পাবেন ভ্রমণে আরামদায়ক অনুভূতি।

 

সাথে খাবার পানি নিন

গ্রীষ্মে আমাদের প্রচুর পানি পিপাসা লাগে। কারন, গরমে ঘামের সাথে প্রচুর পানি আমাদের শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

আর আপনি যখন ভ্রমণে থাকেন তখন এর পরিমাণটা আরও বেশি থাকে। তাই ভ্রমণে সাথে করে অবশ্যই খাবর পানি নিয়ে যাবেন। খাবার পানি নেয়ার জন্য আপনি পানির ছোট বোতল দোকানে কিনতে পাবেন। এটা আপনার ট্রাভেল ব্যাগের সাথে খুব সহজেই বহন করতে পারবেন।

 

খাবার স্যালাইন নিন

গ্রীষ্মে প্রচণ্ড রোদে অনেক সময় শুধু পানি আপনাকে ক্লান্তি এবং ডি-হাইড্রেশন থেকে মুক্তি দিতে পারবে না। তাই সাথে করে খাবার স্যালাইন নিয়ে নিন। কারন, ঘামের সাথে প্রচুর লবণ আমাদের শরীর থেকে বেরিয়ে যায়।

যার ফলে আপনার ডি-হাইড্রেশন হতে পারে। তাই সাথে করে খাবার স্যালাইন নিয়ে যাওয়া উত্তম।

আপনি যে কোন ফার্মেসি থেকে অথবা মুদি দোকান থেকে এই খাবার স্যালাইন কিনতে পাবেন। দাম এক প্যাকেট ৫ টাকা নিবে।

 

ভ্রমণে কিছুক্ষন পর পর পানি পান করুন 

দূরে কোথাও ভ্রমণে গেলে অথবা কোন পার্কে ভ্রমণে গেলে একটানা অনেক সময় ধরে না ঘুরে কিছুক্ষন পর পর বিশ্রাম নিয়ে ভ্রমণ করুণ। হাটার সময় অথবা বিশ্রামের সময় কিছুক্ষন পর পর অল্প অল্প করে পানি পান করুণ।

তবে ভালো হয় যদি আপনি পানির সাথে খাবার স্যালাইন মিশিয়ে নেন। তবে একটা বিষয় খেয়াল রাখবেন যেন, স্যালাইন মেশানো পানি যাতে রৌদ্রের তাপে বেশি গরম না হয়ে যায়। আবার, ১২ ঘন্টার বেশি যাতে এ পানি পান না করা হয়।

 

অতিরিক্ত মোজা নিন

ভ্রমণে অতিরিক্ত মোজা নিন। এটি যে  কোন স্থানে এবং যে কোন সময় (হোক সেটা গরম বা শীত কাল) নিতে পারেন। বিশেষ করে গরমের সময় ভ্রমণে অতিরিক্ত মোজা নেয়া আবশ্যক।

সারাদিন ভ্রমণ শেষে হোটেলে ফিরে আপনার কখনোই ইচ্ছে করবে না পায়ের নোংরা মোজা ধুতে। আর এদিকে সারাদিন ভ্রমণ করার ফলে আপনার পায়ের মোজার অবস্থা খুবই খারাপ। নোংরা দুর্গন্ধ বের হচ্ছে এটা থেকে।

আবার অনেকে রয়েছেন যাদের মোজা পরে কিছুক্ষন হাঁটলেই পা থেকে ঘাম বের হয়ে মোজা পর্যন্ত ভিজে যায়। তাদের জন্য তো এটা আরও মারাত্মক অবস্থা।

পরের দিন যদি আপনি এই মোজা পরে আবার ভ্রমণে যান তাহলে আপনার পায়ে ইনফেকশন পর্যন্ত হতে পারে। আর পা থেকে তো দুর্গন্ধ বের হবেই!

তাই ভ্রমণে যাবার পূর্বে সাথে করে কয়েক জোড়া অতিরিক্ত মোজা নিয়ে নিন।

 

অতিরিক্ত আন্ডারওয়্যার নিন

ভ্রমণের সময় সাথে করে অতিরিক্ত আন্ডারওয়্যার নিন। কারন, ভ্রমনে আমরা সব সময় ঘোরার উপরে থাকি।

সারাদিন ঘোরার ফলে আন্ডারওয়্যার ঘেমে দুর্গন্ধ বের হয়। পরের দিন যদি আবার আপনি এটা পডরে বের হন তাহলে সেখান থেকে ব্যাকটেরিয়া হয়ে আপনার চুলকানি সহ অনেক রোগের জন্ম হতে পারে।

তাই ভ্রমনে অতিরিক্ত আন্ডারওয়্যার নিন।

 

সানগ্লাস ব্যাবহার করুন 

প্রচণ্ড রোদে আপনি যখন কোন দিকে ঠিক মত তাকাতে পারছেন না, তখন আপনার একমাত্র ভরসা হচ্ছে সানগ্লাস। এছাড়া সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি বা আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে বাঁচার জন্য রোদে সানগ্লাস পরা অতি জরুরী।

তাই ভ্রমণে সানগ্লাস ব্যাবহার করুণ।

 

ছাতা ও রেইনকোট সাথে নিন

গ্রীষ্মের সময় ঝড়বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অনেক সময় পূর্বাভাস ছাড়াই বৃষ্টি শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই ভ্রমণে ছাতা ও রেইনকোট সাথে নিন।

এছাড়া প্রচণ্ড রোদ এর হাত থেকে বাঁচার জন্য ছাতা ব্যাবহার করতে পারেন। ছাতা ও রেইনকোট এর দাম খুব বেশি নয়। আপনি ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ হাজার টাকার ভিতরে ভালো মানের ছাতা ও রেইনকোট পেয়ে যাবেন।

 

টিস্যু বা রুমাল নিন

ভ্রমণে সাথে করে টিস্যু বা রুমাল নিন। গরমে আপনি যখন ঘেমে ক্লান্ত তখন ঘাম মুছার জন্য আপনি এই টিস্যু বা রুমাল ব্যাবহার করতে পারেন।

আবার অনেক ভ্রমণকারীকে দেখেছি ঘাড়ে রোমাল দিয়ে রাখতে। এই বিষয়ে এম.বি.বি.এস ডাক্তার মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, “মানুষের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য সবচেয়ে সেনসিটিভ জায়গা হচ্ছে মানুষের মাথা ও ঘাড়ের অংটুকু।”

একজন মানুষের শরীরের তাপমত্রা যখন খুব বেশি থাকে তখন তার ঘাড়ে যদি কোন ভেজা তোয়ালে রাখা হয় তখন তার পুরো শরীর এর তাপমাত্রা খুব দ্রুত কমে আসে।

উদাহরণ সরূপ বলা যায়- একজন খেলোয়াড় যখন খেলার মাঝ খানে বিরতি দেন, তখন একটি নরম ভেজা তোয়ালে দিয়ে তার ঘার ঢেকে দেয়া হয়।

 

Leave a Reply