কোনটির সঙ্গে চ্যবনপ্রাশ খেলে বেশি উপকার মিলবে?
Tweet
আবহাওয়া যে বদল হচ্ছে তা জানান দিচ্ছে। ভোরের দিকে কেমন একটা শীত-শীত ভাব। কারোর আবার জ্বর-সর্দি-কাশি। আর এর থেকে মুক্তি পেতে চ্যবনপ্রাশ খান অনেকেই। সনাতন ভারতে অবশ্য বহু চর্চিত এই চ্যবনপ্রাশ (Chyawanprash) । আয়ুর্বেদশাস্ত্র একালেও অবশ্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। প্রাচীন উপাদান ও অনুপাত মেনে তৈরি করলে চ্যবনপ্রাশ (Chyawanprash)শরীরের জন্য রক্ষাকবচ তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
আবহাওয়া বদলের সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চা বা বাড়ির বয়স্কদের সুস্থ রাখতে সব বাড়িতেই তুলসি, বাসক, পিপুলের মতো আয়ুর্বেদিক পথ্যের সাহায্য নেওয়া হয়। আর দেওয়া হয় চ্যবনপ্রাশ (Chyawanprash) , যা তাঁদের খাওয়ানো হয় সারা শীতকাল জুড়ে। সর্দি-কাশিতে সংক্রমণ থেকে শিশু বা বয়স্কদের রক্ষা করতে যা ছিল অব্যর্থ। সুস্থ থাকতে অনেকই বাড়িতেও বানিয়ে নেওয়া যায় চ্যবনপ্রাশ (Chyawanprash)।
চ্যবনপ্রাশ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সর্দি-কাশির মতো সংক্রমণকে দূরে রাখে। চ্যবনপ্রাশ ৫০ রকমের ভেষজ ওষধি এবং নির্যাস নিয়ে গঠিত। এগুলো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। সম্প্রতি, আয়ুষ মন্ত্রক করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সবাইকে সকালে চ্যবনপ্রাশ (Chyawanprash) খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল। তাই পানি না দুধ কিসের (Chyawanprash) সঙ্গে খেলে আরও বেশি ফল পাবেন দেখে নিন।
রোজ চ্যবনপ্রাশ খেলে কী উপকার পাওয়া যায়?
সনাতন আয়ুর্বেদশাস্ত্রে বহু চর্চিত এটি এইসময়ও খান অনেকেই। প্রাচীন উপাদান ও অনুপাত মেনে তৈরি করলে চ্যবনপ্রাশ শরীরের জন্য রক্ষাকবচ তৈরি করতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আমলকি, লবঙ্গ, শতাবরী, বিদরিকাণ্ড, হরতুকি, কন্টকরি, কাকদাশিঙ্গি, ভূম্যআমলকি, বাসক, পুষ্করমূল, শালপর্ণীর মতো একাধিক ভেষজের সাহায্যে তৈরি করা হয় এই আয়ুর্বেদিক এই মিশ্রণটি। শুধু সর্দি-কাশি-জ্বরই নয়, বদহজম, পিত্তদোষ, প্রস্রাবের প্রদাহ নানা ব্যাধি দূর করতে এর জুড়ি মেলা ভার।
ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োটেকনোলজি ইনফরমেশনে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, এই আয়ুর্বেদিক ওষুধ খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। আমলা থেকে তৈরি চ্যবনপ্রাশ প্রাচীনকাল থেকেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও দীর্ঘায়ু বাড়াতে ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। চ্যবনপ্রাশের বার্ধক্য প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
স্বাস্থ্যের জন্য চ্যবনপ্রাশের অন্যান্য উপকারিতা
শ্বাসতন্ত্রকে পরিষ্কার করে।
হজমশক্তি উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।
শক্তি বাড়ায়।
রক্তকে বিশুদ্ধ করে এবং টক্সিন বের করতে সাহায্য করে।
রক্তচাপকে স্বাভাবিক করে তুলতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরলের জন্য ভালো।
শরীরকে নানা সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, চ্যবনপ্রাশের স্বাভাবিক মাত্রা (১২-২৮ গ্রাম)। রোজ সকালে খালি পেটে দুধের সঙ্গে খেতে হবে। আয়ুষ মন্ত্রক পরামর্শ অনুসারে, ১০ গ্রাম অর্থাৎ এক চা চামচ চ্যবনপ্রাশ সকালে খাওয়া উচিত। হাঁপানি বা অন্যান্য শ্বাসযন্ত্রের রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের এটি হালকা গরম জলের সঙ্গে খাওয়া দরকার। এবং এই সময় দুধ এবং দই এড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। এটি শুধুমাত্র সংক্রমণ প্রতিরোধ করে না বরং সুস্বাস্থ্যও বজায় রাখতে সাহায্য করে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।