বান্দরবানে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার
Tweet
দীর্ঘ ৯ মাস বন্ধ থাকার পর পর্যটন নগরী বান্দরবানে দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। শুক্রবার (১৪ জুলাই) বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াসমিন পারভীন তিবরীজি স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে দীর্ঘ সময় পর পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হলো মেঘকন্যা বান্দরবানের দুয়ার।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেনাবাহিনীর বান্দরবান রিজিয়নের গত ১২ জুলাইয়ের পত্রের আলোকে রুমা ও থানচি উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকদের ভ্রমণ সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো। তবে পর্যটকদের দুর্গম এলাকায় গমনের আগে উপজেলা প্রশাসন থেকে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহপূর্বক যথাযথ সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। রোয়াংছড়ি উপজেলা ব্যতীত বান্দরবান জেলার সকল উপজেলায় স্থানীয় ও বিদেশি পর্যটকরা এখন থেকে ভ্রমণ করতে পারবেন।
এর আগে বান্দরবানের রোয়াংছড়ি-রুমা উপজেলার দুর্গম এলাকাগুলোতে সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়ে যাওয়ায় পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর রোয়াংছড়ি-রুমা উপজেলা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় প্রশাসন। পরে কয়েক দফায় ফের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ রুমা, থানচি এবং রোয়াংছড়ি উপজেলায় পর্যটকদের ভ্রমণে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা জারি করে প্রশাসন। এর দীর্ঘ চার মাস পর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে রুমা ও থানচি উপজেলা পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেওয়া হলো।
এদিকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ফলে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা রুমা উপজেলার কিংবদন্তি বগালেক, রিজুক ঝর্না, জাদীপাই, তিনাপ সাইতার, দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ তাজিংডং, ক্যাওক্রাডং এবং থানচি উপজেলার আকর্ষষীয় পর্যটন স্পট তমাতুঙ্গী, রেমাক্রী, তীন্দু, বড়পাথর, নাফাখুম, অমিয়খুম, বাকলাই ঝর্না, আন্ধারমানিক, বড়মদক, ছোটমদকসহ দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করতে পারবেন।
ট্যুরিস্ট পরিবহন শ্রমিক নেতা মো. কামাল বলেন, দীর্ঘ চার মাস পর রুমা ও থানচি উপজলো পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ায় আমরা খুবই আনন্দিত। নিষেধাজ্ঞায় পর্যটক না আসায় পরিবহন শ্রমিকরা অর্থনৈতিক কষ্টে পড়ে গিয়েছিল। অনেকে ঠিক মতো দুবেলা খেতে পারেননি, ঘরভাড়া পরিশোধ করতে পারেননি। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পর্যটকদরে আগমন বাড়লে শ্রমিকদের কষ্ট কমবে।
বান্দরবান হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দুটি উপজেলায় ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণায় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত আনন্দিত। নিষেধাজ্ঞা আতঙ্কে ঈদের ছুটিতেও পর্যটকের আশানুরুপ আগমন ঘটেনি বান্দরবানে। রুমা ও থানচি উপজেলা পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য খুলে দেওয়ায় মুখ ফিরিয়ে নেওয়া পর্যটকরা আবারও বান্দরবান ভ্রমণে আসবেন। আমরা এটাই আশা করি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি বলেন, পুরো বান্দরবানকেই নিরাপদ রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি আমরা। আপাতত রুমা এবং থানচি উপজেলায় ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে পর্যটকরা গহীন অরণ্যে যেতে পারবেন না। আমরা তাদেরকে দিক-নির্দেশনা দিয়ে দেব। পর্যটকদের ওপর স্থানীয় অনেক মানুষের জীবিকা নির্ভর করে। আশা করছি বান্দরবানে আবারো পর্যটকের সমাগম ঘটবে। রোয়াংছড়ির বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে বলে তিনি জানান।