ভাওয়াল রাজবাড়ি
Tweet
গাজীপুর সদরে অবস্থিত অন্যতম প্রাচীন একটি রাজবাড়ি ভাওয়াল রাজবাড়ি। জমিদার লোক নারায়ণ রায় বাড়িটির নির্মাণ শুরু করলেও শেষ করেন রাজা কালী নারায়ণ রায়। প্রায় পনের একর জায়গাজুড়ে মূল ভবনটি বিস্তৃত। উত্তর-দক্ষিণে প্রায় ৪০০ মিটার দীর্ঘ এ ভবনটির দক্ষিণ পাশে মূল প্রবেশপথ। মূল প্রবেশপথের পরেই রয়েছে প্রশস্ত একটি বারান্দা এবং এর পরে একটি হল ঘর। ভবনের ওপরের তলায় ওঠার জন্য ছিল শাল কাঠের তৈরি প্রশস্ত সিঁড়ি। ভবনের উত্তর প্রান্তে খোলা জায়গায় রয়েছে ‘নাটমণ্ডপ’। একসময় রাজবাড়ির সব অনুষ্ঠান হতো এই মঞ্চে। অন্যদিকে রাজবাড়ির মধ্যে পশ্চিমাংশের দ্বি-তল ভবনের নাম ‘রাজবিলাস’। এ ভবনের নিচে রাজার বিশ্রামাগারের নাম ছিল ‘হাওয়ামহল’। দক্ষিণ দিকে খোলা খিলান যুক্ত উম্মুক্ত কক্ষের নাম ‘পদ্মনাভি’। আর ভবনের দোতলার মধ্যবর্তী একটি কক্ষ ছিল ‘রাণীমহল’ নামে পরিচিতি। প্রাঙ্গণের তিন দিক পূর্ব-পশ্চিম ও দক্ষিণ দিকে ছিল আবাসনের জন্য নির্মিত বারান্দাযুক্ত কক্ষ। বারান্দা ছিল কক্ষসমূহের দিকে উন্মুক্ত এবং বারান্দাগুলোতে করিন্থিয়াস স্তম্ভের ওপর অর্ধবৃত্তাকার খিলান স্থাপন করা হয়েছিল। এসব খিলানের উপরে ফাঁকা লম্বাটে নকশা, স্তম্ভে ফুল, লতা ও লম্বা টানা নকশা ছিল। সুরম্য এ ভবনটিতে ছোট বড় মিলে প্রায় ৩৬০টি কক্ষ আছে। ১৮৮৭ সালে ও ১৮৯৭ সালে ভূমিকম্পে রাজবাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ১৮৯৭ সালের ভূমিকম্পের পর রাজবিলাসসহ অন্যান্য ইমারত পুনর্নিমিত হয়। রাজেন্দ্র নারায়ণ রায় এটি সংস্কার করেন। বর্তমানে এটি জেলাপরিষদ কার্যালয় হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে।
কীভাবে যাবেন
দেশের যে কোরো স্থান থেকে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা হয়ে শিববাড়ি মোড়। সেখান থেকে জয়দেবপুর-রাজবাড়ি সড়ক হয়ে পূর্ব দিকে কিছু দূর অগ্রসর হলে এ রাজবাড়িটির অবস্থান। আর ট্রেনে নামতে হবে জয়দেবপুর জংশনে। একইভাবে যেতে হবে রাজবাড়িতে। এটুকু পথের জন্য রিকশাই সবচেয় ভাল বাহন। কারণ রাজবাড়ির প্রধান ফটকের সামনেই অহরোহ রিকশা থামে। ভাড়া ও খুব বেশি নয়।