শেনজেন ভিসার আবেদনের জন্য যা করতে হবে

Share on Facebook

ইউরোপ তথা শেনজেন
দেশগুলোতে পর্যটন কিংবা যেকোনও কাজে প্রত্যেক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ৯০ দিন অবস্থান
করতে পারেন। এজন্য পেতে হয় শেনজেন ভিসা। এক ভিসাতেই ২৬টি দেশে বেড়ানো যায়। তাই এটি
ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে আরাধ্য।

শেনজেন ভিসার জন্য
কীভাবে আবেদন করতে হয় তা জানতে আগ্রহী অনেকে। কিন্তু ভিসার জন্য আবেদন করার
প্রক্রিয়া পরিশ্রম ও ঝামেলার কাজ! সেই সঙ্গে ভিসা প্রত্যাখ্যান হওয়ার আশঙ্কা তো
থাকেই। ঠিক এসব কারণেই ট্রাভেল এজেন্ট ও ট্যুর অপারেটরদের শরণাপন্ন হন
ভ্রমণপ্রেমীরা। স্বাভাবিকভাবেই ইউরোপে যাওয়ার খরচ বেড়ে যায় তাদের।

বর্তমানে শেনজেন ভিসা দিয়ে থাকে অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, এস্টোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিকটেনস্টাইন, লিথুয়ানিয়া, লাক্সেমবার্গ, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভাকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ড। শেনজেন ভিসার জন্য আবেদনের পরিকল্পনা করার সময় মনে রাখা দরকার কয়েকটি বিষয় –

১. তিন-চার মাস আগে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন। ইউরোপের যেসব দেশ বা শহর কাছাকাছি সেগুলো
নির্বাচন করলে বেড়ানো সম্ভব হয়। এতে করে খরচ লাগে কম। আর সময়ও বাঁচানো যায়।
এক্ষেত্রে পূর্ব ইউরোপ বা পশ্চিম ইউরোপের দিকে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

২. বিমানের রিটার্ন
টিকিট কম টাকায় বুকিং দিতে নিয়মিত গবেষণা করতে হয়। এক্ষেত্রে হ্রাসকৃত মূল্যে
টিকিটের খোঁজ পেতে চার-পাঁচটি বুকিং ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা যেতে পারে। ছুটির দিন
বাদে ভ্রমণের তারিখ বেছে নিলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে ভিসা পাওয়ার আগে কোনোভাবেই
টিকিট কেনা যাবে না। শুধু বুকিং দিলেই চলবে।

৩. ফ্লাইটের মতো
হোটেলও আগাম বুকিং দিন। এক্ষেত্রে টাকা ফেরতযোগ্য অপশন বেছে নিতে হবে। ভিসা না
পেলে কিংবা অন্য কোথাও থাকার পরিকল্পনা করলে অথবা যেকোনও সময় অন্য বিকল্প নির্বাচন
করে যেন পুরনো বুকিং বাতিল করা যায়। পরিবারের সঙ্গে গেলে দুই-তিন তারকা মানের
হোটেল বুকিং দিলে ভালো। বন্ধুদের নিয়ে কিংবা দলবেঁধে গেলে হোস্টেল বেছে নিতে পারেন।

৪. ব্যাংকের সিলসহ
নিজের অ্যাকাউন্টের প্রয়োজনীয় সব কাগজ সংগ্রহ করুন। বিবাহিত কিংবা বিবাহিতা হলে
বিয়ের সনদ, ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, সেভিংস স্টেটমেন্ট ও
অন্যান্য কাগজ নিতে হবে যার মাধ্যমে নিজের মোট অর্থ দেখানো যায়।

৫. চাকরিজীবীরা
কর্মস্থল থেকে অনাপত্তিপত্র (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট) সংগ্রহ করে নিন। এর সুবাদে
ভিসা বাতিলের আশঙ্কা কমে যাওয়ার পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।

৬. অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট
কিংবা বাসের টিকিট আগাম বুকিং দিন। ইউরোপের বিভিন্ন শহরে কম ভাড়ায় বাস ও বিমান
চলাচল করে। তবে সেখানে ট্রেন ব্যয়বহুল,
তাই এই বাহন এড়ালে টাকা বাঁচবে।

৭. বীমা প্রতিষ্ঠানে
গিয়ে ট্রাভেল হেল্থ ইন্স্যুরেন্স করিয়ে নিন। ইউরোপ ভ্রমণের জন্য এটি অত্যাবশ্যকীয়।
বাংলাদেশে শেনজেন ভিসার বীমা প্রদানের জন্য শেনজেন কর্তৃপক্ষের অনুমোদিত নির্দিষ্ট
কিছু ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি আছে।

৮. ব্যাংকের কাগজপত্র, হোটেল বুকিং, বীমা ও আন্তঃনগর ফ্লাইটের বুকিং কিংবা বাসের টিকিট প্রিন্ট দিন। আবেদনের তিন
মাসের মধ্যে তোলা নির্ধারিত মাপের দুই কপি ছবি লাগবে। আবেদনে শেনজেন দেশ থেকে
ফেরার উল্লেখ করা তারিখের পর কমপক্ষে ছয় মাসের মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্ট থাকা চাই।

৯. যেসব কাগজে
স্বাক্ষর প্রয়োজন সেগুলোতে নিজের নাম লিখুন। প্রথমে যে দেশে যাবেন সেই দূতাবাসের
অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে অনলাইনে ফ্রান্স দূতাবাসের ওয়েবসাইটে
গিয়ে আবেদনপত্র পূরণ করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া যায়।

১০.
অ্যাপয়েন্টমেন্টের দিন নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে হাজির হবেন। সব কাগজ দূতাবাসে
ভিসা অফিসারের কাছে জমা দিন। সাক্ষাৎকারে তিনি সন্তুষ্ট হলে ভিসা ফি চাইবেন।
শেনজেন ভিসার মূল্য ৬০ ইউরো থেকে বাড়িয়ে ৮০ ইউরো করা হয়েছে। আগামী ২ ফেব্রুয়ারি
থেকে এই নিয়ম কার্যকর হবে। টাকা প্রদানের পর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হয়।

ভিসার জন্য আবেদন
জমাদানের পর কমপক্ষে ১৫ দিন অপেক্ষা করুন। দেশভেদে ২১ দিন লাগতে পারে। নতুন নিয়ম
অনুযায়ী, ২
ফেব্রুয়ারি থেকে ভ্রমণের ছয় মাস আগেই আবেদন করা যাবে। একবার শেনজেন ভিসা পেয়ে
গেলেই ইউরোপে পর্যটকদের দারুণ সময় কাটবে নিঃসন্দেহে।

আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন

Leave a Reply