যেখানে পথভোলা পর্যটকদের গন্তব্যে পৌঁছে দেয় ‘ পশু হামি’
Tweet
গহীন অরণ্যে পথ হারানো মানুষকে গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছে একটি কুকুর। কুকুরটির নাম ‘হামি’। সম্প্রতি কুকুরটি পথভোলা পর্যটকদের গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে আলোচনায় এসেছে।
হামহাম জলপ্রপাত। পাহাড়ি ও ঝিরি পথের কারণে বিখ্যাত এটি। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পার্শ্ববর্তী কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কুরমা বনবিট এলাকায় পায়ে হাঁটা পথে গহীন জঙ্গলের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। একটু অন্য পথে গেলে পথ হারানোর সম্ভাবণা থাকে। এছাড়া কাছেই ভারতের সীমান্ত। তাই প্রাণহানির ঝুঁকিও রয়েছে।অনেক সময় ফেরার পথে সন্ধ্যা নামে। তখন বিভিন্ন পশু-পাখির আওয়াজ আর পানির শব্দ মিলে ভীতিকর অবস্থা তৈরি হয়। ঠিক তখনই পর্যটককে ভরসা দেয় হামি। বন থেকে বের হয়ে লোকালয় আসা পর্যন্ত হামি পথ দেখায়। কখনো সামনে থেকে, কখনো পেছনে থেকে আগলে নিয়ে আসে পর্যটকদের।
হামি ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় বিকল্প পথে দেখায়। বিকল্প পথে যেতে চিৎকার করে ডাকে। যদি কারো সঙ্গে গাইড না থাকে। তাহলে কুকুরটিই তার গাইড। ঝরনায় একজন পর্যটক থাকলেও হামি একা ফিরবে না। শেষ পর্যটক হামহাম থেকে চলে এলে হামিও লোকালয়ের পথে হাঁটে।স্থানীয় গাইড ও এলাকাবাসী জানায়, কুকুরটি প্রায় ২ বছর ধরে পর্যটকদের সঙ্গে প্রতিদিন সকালে হামহাম জলপ্রপাতে যায়। সেখানে সারা দিন থাকে। পর্যটকদের দেয়া বিভিন্ন খাবার খায়। হামির সঙ্গে আরেকটি কুকুর আছে। সেটার নাম ‘মামি’। তবে হামিই দায়িত্বশীল। যতক্ষণ পর্যটকের আনাগোনা থাকবে, ততক্ষণ হামিও থাকবে।
পর্যটক গাইড নারায়ণ নুনিয়া জানান, এ কুকুর তাদেরই গ্রামে বেড়ে উঠেছে। হামি প্রতিদিন সকালে তার সঙ্গে হামহামের রাস্তায় পা ফেলে। দিন শেষে যারা হামহাম থেকে ফিরে আসেন, তাদের সঙ্গে আসে। কুকুরটি কারো সঙ্গে থাকলে এ বনে চলতে তার আর গাইড লাগে না। পথ ভুলে গেলে গন্তব্যে পৌঁছে দেয়।