করোনায় বাতিল ৮০ শতাংশ ট্যুর প্যাকেজ-টিকিট : টোয়াব
Tweet
করোনাভাইরাসের প্রভাবে পর্যটনশিল্প ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)। সংগঠনটি বলছে, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে পর্যটন ট্যুরের প্যাকেজ ও টিকিট বাতিল করেছেন ৮০ শতাংশ বাংলাদেশি ভ্রমণকারী। করোনার কারণে পেছানো হয়েছে টোয়াব আয়োজিত পর্যটন মেলা বিটিটিএফ-২০২০।
গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায় টোয়াব। দেশের পর্যটনশিল্পের পরিস্থিতি ও বিটিটিএফের ওপর করোনাভাইরাসের প্রভাব সম্পর্কে অবহিত করতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। টোয়াব বলছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পর্যটন মৌসুমের এই সময়ে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার আয় হতে পারত। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষতির পরিমাণ কত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্ট করে জানাতে পারেনি সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে টোয়াব সভাপতি মো. রাফেউজ্জামান বলেন, ‘আউটবাউন্ড ও ইনবাউন্ড পর্যটনের বড় বাজার চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, ভারত ও ইতালিতে করোনাভাইরাসের কারণে পর্যটনশিল্পে বড় ধাক্কা লেগেছে। এই ভাইরাসের আতঙ্কে নেপাল, ভুটান, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ এশিয়ার প্রধান পর্যটন গন্তব্যগুলোয় ট্যুর প্যাকেজ ও টিকিট বাতিল করেছে ৮০ শতাংশ বাংলাদেশি ভ্রমণকারী। একইভাবে বাংলাদেশে আসার পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণও বাতিল করেছে অনেক বিদেশি পর্যটক। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে টোয়াব সদস্যরা।’
রাফেউজ্জামান বলেন, ট্যুর অপারেটররা যাতে ক্ষতির মুখে না পড়ে, সে জন্য ভর্তুকি দেওয়া হোক। যে প্যাকেজগুলো বাতিল হচ্ছে, তাতে শুধু উড়োজাহাজের টিকিট নয়, আরও প্যাকেজ যুক্ত থাকে। তাই ক্ষতিও বেশি। গত মৌসুমও তাদের খুব একটা ভালো কাটেনি।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাবেদ আহমেদ বলেন, করোনার কারণে ভরা মৌসুমে পর্যটন খাতে বিপর্যয় এসেছে। এ কারণে দেশের পর্যটনের বৃহত্তম মেলা দশম শেয়ারট্রিপ বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৩ থেকে ৫ এপ্রিলের পরিবর্তে তা আগামী ২৯ থেকে ৩১ অক্টোবর হবে। এত বড় সংকটে পর্যটন খাতের অনেকেই চাকরি হারাবেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা কাম্য।
টোয়াব পরিচালক (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিকেশন) মো. সাহেদ উল্লাহ বলেন, করোনার কারণে কাতার, নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ বাংলাদেশিদের জন্য আগমনী ভিসা বাতিল করেছে। ইউরোপ থেকে বাংলাদেশে ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। বাংলাদেশ যেসব দেশের জন্য আগমনী ভিসা দিয়ে থাকে, তা বাতিল করেছে। এতে ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের পর্যটনশিল্প।
দেশের পর্যটন খাতের ক্ষতি এড়াতে সরকারের কাছে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার সুপারিশ জানিয়েছে টোয়াব। তাদের অন্য সুপারিশগুলো হলো—বন্দরে অপ্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ শিথিল করা, সহজ সুবিধায় ও কম খরচে ভিসা দেওয়া, পর্যটকদের ট্যাক্স কমানো, উড়োজাহাজের টিকিটের ট্যাক্স কমানো, ভ্রমণস্থান নিয়ে প্রচার বাড়ানো, ট্যুর অপারেটরদের ইনসেনটিভ দেওয়া। সংবাদ সম্মেলনে টোয়াবের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, পরিচালক (ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার) মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।