রেমিটেন্সে প্রণোদনার শর্ত শিথিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক
Tweet
কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে রেমিটেন্সের ‘খরা’ কাটাতে এ সংক্রান্ত প্রণোদনার শর্ত শিথিল করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এখন থেকে কোনো প্রবাসী পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার বা পাঁচ লাখ টাকা দেশে পাঠালে কোনো কাগজপত্র ছাড়াই ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাবেন।
আর ৫ লাখ টাকার বেশি রেমিটেন্স পাঠালে প্রণোদনার জন্য দুই মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের সুযোগ পাবেন, যা আগে ছিল ১৫ দিন।
রেমিটেন্সের সঙ্গে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনার অর্থ পেতে তখন প্রেরকের পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র জমা দিতে হবে। আর প্রেরক ব্যবসায়ী হলে তার লাইসেন্সের কপি দাখিল করতে হবে।
এতদিন যারা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন তারাও এই সুবিধা প্রাপ্য হবেন। ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ পর্যন্ত এ সুবিধা বহাল থাকবে।
এতদিন দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত দেশে পাঠালে কোনো কাগজপত্র দেখানো ছাড়াই প্রণোদনার টাকা পাওয়া যেত।
মঙ্গলবার এক সার্কুলার জারি করে নতুন সুযোগ সুবিধার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো ‘বৈধ উপায়ে রেমিটেন্স প্রেরণের বিপরীতে নগদ সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তগুলো ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম দিন, অর্থাৎ গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর ধরা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সংকট দেখা দেওয়ায় রেমিটেন্স প্রবাহ কমে গেছে। প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠাতে উৎসাহিত করতেই এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীরা এখন ১০০ টাকা দেশে পাঠালে যার নামে টাকা পাঠাচ্ছেন তিনি ওই ১০০ টাকার সঙ্গে ২ টাকা যোগ করে ১০২ টাকা তুলতে পারছেন। বাজেটে এ জন্য ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান সূচক রেমিটেন্সে পড়তে শুরু করেছে গত মার্চ মাস থেকে। তার আগ পর্যন্ত ২০ শতাংশের উপরে প্রবৃদ্ধি ছিল।
মার্চে ১২৮ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা গত বছরের মার্চ মাসের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ কম।
পরের মাস এপ্রিলে ১০৮ কোটি ১০ লাখ রেমিটেন্স এসেছে। এই অংক গত বছরের এপ্রিলের চেয়ে ২৪ দশমিক ৬১ শতাংশ কম।
আর চলতি মে মাসের ১১ দিনে (১ মে থেকে ১১ মে) ৫১ কোটি ২০ লাখ ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই-এপ্রিল সময়ে এক হাজার ৩৩০ কোটি ৩২ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এসেছে এক হাজার ৪৫৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ৪২ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা, যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ বেশি।