প্লাজমা দানে কোভিড প্রতিরোধ শক্তি কমে না
Tweet
প্লাজমা পদার্থের চতুর্থ অবস্থা (কঠিন, তরল ও বায়বীয়র পর)। প্লাজমা হচ্ছে আয়নিত গ্যাস যেখানে মুক্ত ইলেকট্রন এবং ধনাত্মক আয়নের সংখ্যা প্রায় সমান।
প্লাজমা ডোনেট চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটি বেশ পুরোনো একটি পদ্ধতি।এই পদ্ধতিতে সাধারণত কোন ভাইরাস সংক্রমণ থেকে সেরে ওঠা মানুষের রক্ত সংগ্রহ করা হয়। এরপর সেই রক্ত সঞ্চালিত করা হয় একই ধরনের ভাইরাল সংক্রমণের শিকার রোগীর দেহে।
১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লুর মহামারি এবং ১৯৩০ এর দশকে হামের চিকিৎসায় এই পদ্ধতি কাজে লাগানো হয়েছিল। একেবারে সাম্প্রতিক সময়ে ইবোলা, সার্স এবং ’এইচ-ওয়ান-এন-ওয়ান’ এর মতো রোগের চিকিৎসায়ও এটি ব্যবহার করা হয়েছে।
করোনাজয়ীদের রক্তে উপস্থিত অ্যান্টিবডিতে বাঁচতে পারে কারও প্রাণ। তাই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা ব্যক্তিদের ব্লাড প্লাজমার বিপুল চাহিদা। কিন্তু প্লাজমা সংগ্রহ অভিযান ধাক্কা খাচ্ছে কিছু মানুষের ভুল ধারণার কারণে। অনেকে মনে করছেন, প্লাজমা দান করলে শরীরে অ্যান্টিবডির পরিমাণ কমে যাবে। যার জেরে ফের সংক্রমণ হতে পারে। কিন্তু এই ধারণা ঠিক নয়।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ শ্মুয়েল শোহ্যাম বলেন, ‘একজন মানুষের শরীরে থাকা অ্যান্টিবডির খুবই সামান্য অংশ প্লাজমা সংগ্রহে নেওয়া হয়। তা ছাড়া মানবশরীর ফের তা উৎপাদনও করে নেয়।’
বিশ্বের অনেক দেশে ইতোমধ্যেই করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি শুরু করা হয়েছে। কিছুদিন আগে বাংলাদেশে কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি হাসপাতালে কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপি করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিসের বক্তব্য, ‘প্লাজমা দানে ভবিষ্যতে শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা থাকে না। যা সংগ্রহ করা হয়, সেই ‘ক্ষতি’ দ্রুত পূরণ করে দেয় শরীরের রোগ প্রতিরোধ তন্ত্র।’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দ্য নিউ ইয়র্ক ব্লাড সেন্টারের বক্তব্য, ‘সপ্তাহে দু’বার প্লাজমা দানেও শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে না।’
মিনেসোটার রচেস্টারে মেয়ো ক্লিনিকের চিকিৎসক স্কট রাইটের কথায়, ‘কোভিড থেকে সেরে ওঠার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্লাজমা সংগ্রহ করতে হয়।’ সুস্থ হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কেউ প্লাজমা দিলে কয়েক মাসের মধ্যে ফের তা করার সুযোগ পেতে পারেন কোনও ব্যক্তি।