ধর্ষণ : ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতৃত্ব হারালেন মামুন
Tweet
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ধর্ষণের মামলা করার পর বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব থেকে হাসান আল মামুনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। বুধবার বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তদন্ত কমিটিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পরিষদের দুজন যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক রহমান ও রাফিয়া সুলতানাকে রাখা হয়েছে। তাদেরকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সুপারিশসহ ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগঠনের নির্বাহী পরিষদের কাছে জমা দিতে বলা হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্র অধিকার পরিষদ গণমানুষের যৌক্তিক ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। নারীর প্রতি বৈষম্য ও নিপীড়ন দমন এবং নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ছাত্র অধিকার সব সময়ই সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছে। তাই সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা নিরূপণে এবং সুষ্ঠু ন্যায়বিচারের স্বার্থে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
গত রবি ও মঙ্গলবার রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ, অপহরণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে নুরুল হক নুর ও তার ছয় সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্রী। প্রথম মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুনকে, যিনি শুরু থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর এই পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। দ্বিতীয় মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে পরিষদের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগকে।
বাদীর ভাষ্য, একই বিভাগে পড়া এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কাজে থাকার কারণে হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। এর সুযোগ নিয়ে মামুন চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি তার লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন। এ অভিযোগেই তিনি লালবাগ থানার মামলাটি দায়ের করেন। আর কোতোয়ালি থানার মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ধর্ষণের ওই ঘটনার পর ওই শিক্ষর্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে সোহাগ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। সুস্থ হওয়ার পর মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই তরুণী। তখন সোহাগ তাকে ‘সহযোগিতার আশ্বাস’ দেন এবং মামুনের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে সদরঘাট হয়ে ‘লঞ্চে করে চাঁদপুরে’ নিয়ে যান।
কিন্তু চাঁদপুরে মামুনকে না পেয়ে ওই ছাত্রীর সন্দেহ হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে লঞ্চে সোহাগ তাকে ‘ধর্ষণ করেন’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়। এজাহারে বলা হয়, এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই তরুণী নুরের সঙ্গে দেখা করেন। নুর তাকে প্রথমে ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে ‘বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে অপপ্রচার চালিয়ে সম্মানহানী করার’ হুমকি দেন। এছাড়া নুরুল হক নুরসহ মামলার তালিকায় আছেন সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা ও কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকি।