২০২০ সালে কোথায় ঘুরতে যাবেন?

Share on Facebook

পুরাতন বছর বিদায় নিলো সূর্যোদয়ের সাথে সাথেই।
এসেছে নতুন বছর ২০২০ সাল। গত বছরে হয়তো অনেক ইচ্ছা ছিলো ঘুরে বেড়ানোর। কিন্তু
পরিকল্পনার অভাবে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তাই এবছর শুরুতেই স্থান নির্ধারণসহ বিভিন্ন
পরিকল্পনা করে রাখুন। আর সে জন্যই তুলে ধরা হলো কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের পরিচিতি।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত

সমুদ্রসৈকত             
দেশের আলোচিত ও জনপ্রিয় দুটি সমুদ্রসৈকত হচ্ছে কক্সবাজার ও কুয়াকাটা। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত। আর কুয়াকাটা বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত। সারা বছরই এ দুটি সমুদ্রসৈকতে ভিড় জমে। তবে বর্ষাকালে সমুদ্রের ভয়াবহতার কারণে সবাই এড়িয়ে চলে। তবে শীতকালে জমে ওঠে এ দুটি সৈকত। তাই বছরের যেকোনো সময় ঘুরে আসা যায় এখান থেকে।

পতেঙ্গা

পতেঙ্গা
পতেঙ্গা চট্টগ্রাম শহরের সমুদ্রসৈকত যা কর্ণফুলী নদীর মোহনায় বন্দরনগরী থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এটি চট্টগ্রাম শহরের একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর ঘাঁটি বিএনএস ঈসা খান পতেঙ্গার সন্নিকটে অবস্থিত। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের অনেক জেটি ও নেভাল একাডেমি এখানে অবস্থিত।

খৈয়াছড়া

খৈয়াছড়া
চট্টগ্রাম শহরের এ কে খান থেকে ঢাকা, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন লোকাল বাসে ৫০-৮০ টাকার মাধ্যমে খৈয়াছড়া রাস্তার মুখে নামবেন। গাড়ির হেলপারকে বললেই নামিয়ে দেবে। একইভাবে ঢাকার যে কোন বাস কাউন্টার থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে উঠবেন। যাওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে চট্টগ্রামের মিরসরাই পার হয়ে বড়তাকিয়া বাজারের আগে খৈয়াছড়া আইডিয়াল স্কুলের সামনে নামবেন। সেখানে নেমে স্থানীয় লোকদের জিজ্ঞাসা করলেই তারা বলে দেবে কোন পথে যেতে হবে। লোকজন যে রাস্ত দেখিয়ে দেবে ওই রাস্তার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা সিএনজিগুলোতে ১৫ টাকা দিয়ে অর্ধেক রাস্তা পর্যন্ত যায়। সিএনজিগুলোর কাজ শুধু এটাই। বাকি পথ হেঁটে যেতে হবে।
আরও পড়ুন, ঘুরে আসুন ‘ঝর্ণা রাণী’ খৈয়াছড়া

বগা লেক

বগা লেক
বগাকাইন লেক বা বগা লেক নামে পরিচিত এ প্রাকৃতিক লেকটি বান্দরবানের রুমা উপজেলার অন্তর্গত। সম্ভবত ২০০০ বছর আগে মৃত কোন আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ বা উল্কাপিণ্ড পতনের ফলে লেকটি তৈরি হয়েছিল। যদিও এ লেকের ব্যাপারে অনেক উপকথাও প্রচলিত আছে। ‘ড্রাগন লেক’ নামে খ্যাত ১৫ একরের বিশাল জায়গা নিয়ে সৌন্দর্যের জানান দিচ্ছে বগা লেক। লেকের গভীরতা ১২৫ ফুট। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১২৪৬ ফুট উপরে থাকা লেকটি আকাশ, সবুজের চাদরে ঢেকে থাকা পাহাড়, নীল জলের অপরূপ সৌন্দর্যের পসরা সাজিয়ে আছে।

শ্রীমঙ্গল

শ্রীমঙ্গল
শ্রীমঙ্গলের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে- লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, চা জাদুঘর, টি রিসোর্ট, ডিনস্টন সিমেট্রি, চাকন্যা ভাস্কর্য, নির্মাই শিববাড়ি, চা গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ বন্যপ্রাণি সেবা ফাউন্ডেশন, খাসিয়াপুঞ্জি, টিপরা পল্লি, মণিপুরী পাড়া, গারো পল্লি, নীলকণ্ঠ টি কেবিন, বার্নিস টিলা, গলফ কোর্স, পাখি বাড়ি, বাদুর বাড়ি, লালমাটি পাহাড়, রাবার বাগান, আনারস বাগান, মাধবপুর লেক, হাইল হাওর, বাইক্কা বিল প্রভৃতি। দেশের যেকোনো স্থান থেকে সড়ক ও রেলপথে সহজেই শ্রীমঙ্গল যাওয়া যায়। থাকার জন্য এখানে রয়েছে হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস। কম খরচে থাকার জন্যও হোটেল আছে। শীতকালে অগ্রিম বুকিং দিলে ভালো হয়।
আরও পড়ুন, এই শীতে ঘুরে আসুন শ্রীমঙ্গল থেকে

হিমছড়ি

হিমছড়ি
কক্সবাজার থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত হিমছড়ি। এখানে রয়েছে পাহাড়, সমুদ্র ও ঝরনার অপূর্ব মিলনমেলা। যা ভ্রমণপিপাসুদের বিমোহিত করে। একপাশে রয়েছে সুবিস্তৃত সমুদ্রসৈকত আর অন্যপাশে রয়েছে সবুজ পাহাড়ের সারি। পাদদেশের ইকোপার্ক থেকে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে পাহাড়ের উচ্চতা প্রায় ৩শ’ ফুটের মতো। কক্সবাজার শহর থেকে অটোরিকশা বা সিএনজি ভাড়া নিয়ে হিমছড়ি যাওয়া যায়। হিমছড়ির উদ্দেশে কক্সবাজার সৈকত থেকে সবসময়ই জিপ গাড়ি ছেড়ে যায়। চাইলে বিভিন্ন বাহনে হিমছড়ি যেতে পারবেন।

লাউয়াছড়া

লাউয়াছড়া
লাউয়াছড়া বাংলাদেশের একটি জাতীয় উদ্যান। মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় এর অবস্থান। সাড়ে বারোশ’ একর জমিতে ১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগে এ বনের পত্তন করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৬ সালে এ বনকে জাতীয় উদ্যান হিসেবে ঘোষণা করে। এখানে রয়েছে দুর্লভ ও বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বিচিত্র গাছ, কীট পতঙ্গ, প্রাণি ও পাখি। পৃথিবী থেকে বিলুপ্তপ্রায় এক প্রজাতির উল্লুক আর বিষধর সাপের জন্য উদ্যানটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় স্থান।

দুর্গাসাগর দীঘি

দুর্গাসাগর দীঘি
বরিশাল শহর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার উত্তরে স্বরূপকাঠি-বরিশাল সড়কের মাধবপাশায় এর অবস্থান। শুধু জলাভূমির আকার ২৭ একর। পার্শ্ববর্তী পাড় ও জমিসহ মোট আয়তন ৪৫.৪২ একর। ১৭৮০ সালে চন্দ্রদ্বীপের পঞ্চদশ রাজা শিব নারায়ণ এ জলাধারটি খনন করেন। তার স্ত্রী দুর্গামতির নামানুসারে এর নামকরণ করা হয় দুর্গাসাগর। ১৯৭৪ সালে দীঘিটি সংস্কার করা হয়। বর্তমানে দীঘিটি বরিশাল জেলা প্রশাসন তত্ত্বাবধান করছে।

সুসং দূর্গাপুর

সুসং দুর্গাপুর
বাংলাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অনেক দর্শনীয় স্থান। তেমন একটি স্থান নেত্রকোণার সুসং দুর্গাপুর। এর মূল আকর্ষণ সাদা মাটির পাহাড়, রানীখং গির্জা ও সোমেশ্বরী নদী। এর জন্য আপনাকে যেতে হবে বিজয়পুর চিনামাটির পাহাড়ে।
আরও পড়ুন, ঘুরে আসুন সুসং দূর্গাপুর থেকে

সোনারগাঁও

সোনারগাঁও
রাজধানীর অদূরেই নারায়ণগঞ্জে অবস্থিত ঈশা খাঁর স্মৃতিবিজড়িত সোনারগাঁও। ঈশা খাঁর আমলের রাজধানী সোনারগাঁওয়ের রাজকীয় ভবন রয়েছে। পাশেই লোক ও কারুশিল্প জাদুঘর। জাদুঘরে রয়েছে জমিদারী আমলের বিভিন্ন তৈজসপত্র থেকে শুরু করে জমিদারদের ব্যবহৃত অনেক নিদর্শন। জাদুঘরে প্রবেশ করতে জনপ্রতি দিতে হয় ৩০ টাকা করে। চার বছরের নিচের শিশু ও প্রতিবন্ধিদের জন্য প্রবেশ একদম ফ্রি।

২০২০ সালে ঘুরে বেড়াতে
পারেন এসব দর্শনীয় স্থানে। এছাড়াও বিভিন্ন রিসোর্ট, পার্ক, ইকো পার্ক ও
বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে দেখতে পারেন ইচ্ছেমতো।

Leave a Reply